ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনমানুষের নেতা মোজাম্মেল হক চৌধুরী: যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সাহসী মুখ-


আপডেট সময় : ২০২৫-০৯-১০ ২৩:৩৪:১৯
জনমানুষের নেতা মোজাম্মেল হক চৌধুরী: যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সাহসী মুখ- জনমানুষের নেতা মোজাম্মেল হক চৌধুরী: যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সাহসী মুখ-

এম মনির চৌধুরী রানা /মো.কামাল উদ্দিন:

বিগত সরকারের সময় আজকের এইদিনে গভীর রাতে, ঠিক ভোররাতে হঠাৎ করেই মিরপুর মডেল থানার পুলিশ এসে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেয়েছিল। কেন তাঁকে আটক করা হলো, সেই বিষয়ে এখনো কোনো সরকারি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

তবে এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই জনমনে নানা প্রশ্ন, শঙ্কা এবং ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। মোজাম্মেল হক চৌধুরী নামটি বাংলাদেশের গণমানুষের কাছে শুধু একটি সংগঠনের মহাসচিব নয়, বরং যাত্রী অধিকার আন্দোলনের প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দেশের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছেন বাস-ট্রাক-মাইক্রোবাস থেকে শুরু করে প্রতিদিনের ভোগান্তির বিরুদ্ধে।

তার আন্দোলনের কারণেই আজ যাত্রী সেবা, যাত্রী অধিকার এবং সড়কে শৃঙ্খলার বিষয়ে কিছুটা হলেও সচেতনতা তৈরি হয়েছে, নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে আলোচনার জন্ম হয়েছে। কিন্তু এই সাফল্যের পথ মোটেও সহজ ছিল না। বারবার ষড়যন্ত্র হয়েছে তাঁকে দমিয়ে রাখার জন্য। সেই সময়ের ক্ষমতাসীন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক রাখার চেষ্টা করেছিলেন।

তাঁকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু মানুষ জানত—এই মানুষটি মিথ্যা বা ভণ্ডামির আড়ালে লুকানো কোনো চরিত্র নন। তাই সেদিন সারাদেশের মানুষ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল। সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, শ্রমজীবী—সবাই কণ্ঠ মিলিয়েছিল মোজাম্মেল হক চৌধুরীর জন্য। আমিও তখন তাঁর হয়ে কলম ধরেছিলাম। আমার সঙ্গে মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সম্পর্ক দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময়ের। তিনি আমারই এলাকার মানুষ—বোয়ালখালীর গর্ব। লেখালেখির জগৎ থেকে শুরু করে রাজপথের আন্দোলন পর্যন্ত তাঁর সাহচর্য পেয়েছি আমি। অসংখ্য দিন-রাত্রি আমরা কাটিয়েছি মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে। তার চিন্তা, মনন, দর্শন সবকিছুই সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিবেদিত।

তিনি সবসময় জনমুখী ছিলেন, এখনো আছেন। আজকে তিনি শুধু একজন সংগঠক নন, তিনি জাতীয় নেতা, তিনি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। গণমানুষের অধিকার রক্ষায় তাঁর ভূমিকা আজ সবার কাছে অনস্বীকার্য। সড়কের ভাঙা সেতু থেকে শুরু করে অতিরিক্ত ভাড়া, পরিবহনে হয়রানি, দুর্ঘটনার শিকার পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো—প্রতিটি জায়গায় মোজাম্মেল হক চৌধুরী ছিলেন নির্ভীক যোদ্ধা। তাঁর কণ্ঠস্বর আজ সারা দেশের যাত্রীদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। তাঁকে নিয়ে লেখা কয়েকটি লাইনে শেষ করা সম্ভব নয়। কারণ মোজাম্মেল হক চৌধুরী কোনো একক ব্যক্তি নন—তিনি এক ইতিহাস, এক আন্দোলন, এক প্রতিরোধের নাম। আজ তাঁর এই আকস্মিক গ্রেপ্তার আমাদের মনে করিয়ে দিল, এদেশে সত্য বলার, মানুষের পক্ষে দাঁড়ানোর মূল্য আজও চড়া।

 তবুও আমরা বিশ্বাস করি- সত্য কখনো দমিয়ে রাখা যায় না। মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে হয়তো আজকে আটক করা হয়েছে, কিন্তু তাঁর লড়াইকে আটকানো যাবে না। ইতিহাসের পাতায় তাঁর নাম চিরকাল থাকবে—যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সাহসী মুখ, জনমানুষের নেতা হিসেবে।



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ